Wednesday, August 31, 2016

মণিরামপুরে এখনও জমেনি কোরবানি পশুর হাট


মনিরামপুর কণ্ঠ ডেক্স।।

ঈদুল আযহার আরমাত্র কয়েক দিন বাকি। এবারের ঈদের প্রধান উৎস কোরবানির পশু হলেও কাঙ্খিত ক্রেতার অভাবে মণিরামপুরে জমে উঠেনি কোরবানি পশুর হাট। হাটে পশুর উপস্থিতি চোখে পড়লেও তেমন একটা চোখে পড়েনি ক্রেতার। যা দুই এক জন ক্রেতা আসছেন তারা আবার দাম চড়া বলে পশু না কিনেই বাড়ি ফিরেছেন। তবে দাম নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতাতের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পূর্বে পৌর শহরের পশুর হাট ঘুরে এমন চিত্র চোখে পড়ে।

মণিরামপুরে সপ্তাহে শনিবার ও মঙ্গলবার এই দুই দিন পশুর হাট বসে। সেপ্টেম্বরের ১২ তারিখ সোমবার ঈদুল আযহা। সেই হিসাব করলে ঈদের আগে আর মাত্র তিনটি হাট পড়বে। তবে হাট কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করলে রোববার অর্থ্যাৎ ঈদের আগের দিন একটা হাট বসাতে পারে। গত বছর  এমন সময়ে কোরবানির পশুর হাট জমজমাট হলেও এবার তা জমেনি মোটেও। এর জন্য অনেকে জলাবদ্ধ অবস্থার কথা তুলে ধরছেন। তারা বলছেন,উপজেলার লাখ লাখ মানুষ দীর্ঘদিন পানিতে আটকা পড়ে আছে। ফলে ঈদের আনন্দ কেমন হবে বুঝতেই পারছেন। তবে জলাবদ্ধতা থাকলেও বাজারে পশুর দামের উপরে তার কোন প্রভাব পড়েনি বলে মনে করছেন ক্রেতারা। আবার বিক্রেতারা বলছেন,গত বছরের তুলনায় এবার পশুর দাম অনেক কম।

বাজারে কোরবানির গরু কিনতে এসেছেন এমন একজন উপজেলার ফতেয়াবাদ গ্রামের মোবাসসের হোসেন। তিনি বলছেন, ৬০ হাজার টাকার গরু কিনতে এসেছি। কিন্তু মাংশের হিসাবে গরুর দাম বেশি। তাই সেই গরুর দাম চাচ্ছে ৭০-৭২ হাজার টাকা। তিনি দাবি করেন, সামনে আরও হাট বাকি আছে বলে এত বেশি দাম চাচ্ছে। একই কথা বললেন ওই গ্রামের ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন,৪৮ হাজার টাকা দামের গরু চাচ্ছে ৬০-৬৫ হাজার টাকা।

যশোরের বকচর হুসতলা থেকে হাটে গরু কিনতে এসেছেন যুবক উৎস। তিনি বলেন,ক্ষমতা আছে ৩২-৩৩ হাজার টাকার গরু কেনার কিন্তু দাম চাচ্ছে ৪৮-৫২ হাজার টাকা। তাই পশু না কিনেই তিনি বাড়ি ফিরছেন। একই অবস্থা ছাগলের বাজারেও। উপজেলার রামনগর থেকে কোরবানির ছাগল কিনতে এসেছেন রুমা নামের এক গৃহবধু। তিনি বলেন,তুলনামূলক দাম বেশি। সাড়ে ৪ হাজার টাকার ছাগল চাচ্ছে ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা।

তবে ক্রেতাদের এমন দাবি মানতে নারাজ উপজেলার খানপুর গ্রামের গরুর ব্যাপারী আব্দুল কুদ্দুস। তিনি বলেন, তুলনামূলকভাবে গরুর বাজার নি¤œমুখী। গ্রামে গরুর দাম বেশি কিন্তু বাজারে কম। তাই লস হচ্ছে। যে গরু ৩০ হাজার টাকায় কিনে আনতে হচ্ছে,সেই গরু বাজারে দাম উঠছে ২৭ হাজার টাকা। তিনি হাটে আনা ৪ টা গরুর মধ্যে ১ টা বিক্রি করতে পেরেছেন। তবে তাও কেনা দামে। মণিরামপুরের বিভিন্ন এলাকায় পানি উঠে যাওয়ায় গরুর দাম কমেছে কিনা জানতে চাইলে আব্দুল কুদ্দুস বলেন, দাম মোটেও কমেনি। যাদের বাড়ি পানি উঠে গেছে তারা আতœীয় স্বজনদের বাড়ি গরু ছাগল পাঠিয়ে দিয়েছে। উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের ছাগলের ব্যাপারী হাসান আলী ও আব্দুল কুদ্দুসের সাথে একমত দিয়েছেন।

তবে সাতক্ষীরা থেকে গরু নিয়ে আসা ব্যাপারী মিঠু ও কেশবপুর এলাকার ব্যাপারী আব্দুল বারেক বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের ভাষ্য,গরুর বাজার ভাল যাচ্ছে। যে দাবে কিনতেছি তার থেকে লাভে বিক্রি হচ্ছে। তবে মাংশের দাম বাড়ায় গত বছরের তুলনায় এবার গরুর দাম বেশি বলে তারা মত দিয়েছেন। আব্দুল বারেক বলেন, আজ (মঙ্গলবার) হাটে একটা গরু ১ লাখ ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি।

হাটের ইজারাদার বিষ্ণু দাস বলেন, পশুর দাম তুলনামূলকভাবে কম আছে। বাজার এখনও জমেনি। তবে সামনে কয়েকটি হাট বাকি আছে। তাই হাট জমার আশায় আছি আমরা।

0 comments: