Saturday, August 6, 2016

বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে যশোরে যারা


মণিরামপুর কণ্ঠ ।।

 নবঘোষিত বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে যশোরের আট নেতাকে সদস্য করা হয়েছে। এছাড়া একজনকে সম্পাদকীয় পদ দেওয়া হয়েছে। এর আগে জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে একজন এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে একজন নিযুক্ত হন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে কমিটি ঘোষণা করেন, তাতে যশোর জেলার ১১ জনের নাম রয়েছে।
নয়া কমিটিতে নির্বাহী সদস্য হিসেবে রয়েছেন যশোর জেলার আট নেতা। এরা হলেন, অ্যাডভোকেট কাজী মুনিরুল হুদা, প্রকৌশলী টিএস আইয়ুব, আবুল হোসেন আজাদ, ফারাজী মতিয়ার রহমান, চমন আরা বেগম, অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সাবিরা ইসলাম মুন্নি এবং ফিরোজা বুলবুল কলি।
এদের মধ্যে শেষ তিনজন এবারই প্রথম নির্বাহী কমিটিতে স্থান পেলেন। অ্যাডভোকেট সাবু যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আর ফিরোজা বুলবুল কলি জেলা জাতীয়তাবাদী মহিলাদলের সভাপতি। সাবিরা ইসলাম মুন্নি ঝিকরগাছা উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান।
এর আগে বর্ষীয়ান নেতা তরিকুল ইসলামকে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে মনোনীত করেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। পরে তার ছেলে ও জেলা বিএনপির সদস্য অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) করা হয়।
গতকাল শনিবার ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে যশোরের আরেকজন রয়েছেন। তিনি হলেন কেশবপুরের অমলেন্দু দাস অপু। তাকে সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক করা হয়েছে। এই পদে তিনি বিদায়ী কমিটিতেও ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছে দলীয় সূত্রগুলো।
কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাওয়াদের মধ্যে কাজী মুনিরুল হুদা, টিএস আইয়ুব, আবুল হোসেন আজাদ এবং অমলেন্দু দাস অপু স্থায়ীভাবে রাজধানীতে বসবাস করেন। তবে মুনিরুল হুদা বাদে অন্যরা নিয়মিত এলাকায় যাতায়াত করেন। টিএস আইয়ুব বাঘারপাড়া উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক। আবুল হোসেন আজাদ কেশবপুর উপজেলা কমিটির সভাপতি।
নতুন নির্বাহী কমিটিতে যে আটজনের নাম এসেছে তাদের অনেকের ব্যাপারে প্রশ্ন তুলছেন জেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা বলেন, কাজী মুনিরুল হুদা কার্যত রাজনীতি থেকে নির্বাসিত। এলাকার সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নেই। চমন আরা বেগম শারীরিকভাবে আনফিট। আবুল হোসেন আজাদ আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা রাখেন না। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দণ্ডাদেশের প্রতিবাদে সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হলেও আবুল হোসেন আজাদ সপরিবারে আমেরিকা সফর নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। সাবিরা ইসলাম মুন্নির দলের প্রতি কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন আছে।
স্থানীয় নেতারা বলছেন, নিষিক্রীয়, সুবিধাবাদী, আনফিটদেরও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে স্থান দেওয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, দলটির নীতিনির্ধারকরা তৃণমূলের খোঁজ-খবর রাখেন না। যারা হামলা-মামলা, জেল-জুলুম মোকাবেলা করে আন্দোলন-সংগ্রামের মাঠে রয়েছেন, তারা স্পষ্টতই বঞ্চিত বলে মনে করছেন।
মন্তব্য জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, ‘আমি এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেখিনি। তাই মন্তব্য করা সমীচীন হবে না।’
আরেক নেতা টিএস আইয়ুবের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নীতিনির্ধারকরা যা করেছেন, তা মেনে নিতে হবে। এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতারা বলছেন, দীর্ঘ সময় নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করায় জেলা পর্যায়ের নেতারা ‘ভালো কিছু’ হবে বলে আশা করেছিলেন। কিন্তু তাদের সে আশা পূরণ হয়নি।
কেউ কেউ মন্তব্য করেন, ‘এটি আসলে রাজনৈতিক দলের কমিটি হয়নি; সমিতি গঠন করা হয়েছে। কমিটির নামে অশ্বডিম্ব উপহার দেওয়া হয়েছে।’

0 comments: