মণিরামপুরে ভবন ঝুঁকিপূর্ণ, শিশুদের পাঠদান ব্যাহত
মণিরামপুর কন্ঠ ডেক্স।।
মণিরামপুরের রোহিতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনটি ভবনের মধ্যে একটির ছাদ ভেঙে ও পলেস্তরা খসে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ভবনটি শিক্ষার্থীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় তা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে কক্ষ সংকটে বিদ্যালয়ে পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৬-৯৭ অর্থবছরে রোহিতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চার কক্ষবিশিষ্ট একটি ভবন তৈরি করে দেয় সরকার। ভবনটি তৈরির পর থেকেই বর্ষা মৌসুমে ছাদে পানি জমে তা শ্রেণিকক্ষের ভেতরে চুইয়ে চুইয়ে পড়ে। ফলে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের অবস্থান ও পাঠদান ব্যাহত হতে থাকে। আস্তে আস্তে ছাদের পলেস্তারা খসে নিচে বাচ্চাদের গায়ে পড়তে থাকে।
বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানালেও তা সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তারপরও ঝুঁকি নিয়ে ভবনটির শ্রেণিকক্ষগুলোতে পাঠদান অব্যাহত রাখেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি দুই দফা ভারি বর্ষণে শ্রেণিকক্ষে পানি জমে যায়। তাছাড়া ভবনের বিভিন্ন স্থানে পলেস্তরা খসে গেছে এবং ছাদের রড বেরিয়ে পড়েছে। আবার কোনো কোনো জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে বড় ধরনের ঝুঁকি এড়াতে স্কুল কর্তৃপক্ষ শ্রেণিকক্ষগুলোতে ক্লাস নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
সম্প্রতি ‘রোহিতা প্রাইমারি স্কুলের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ, যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা’ ছবি সম্বলিত এরকম একটি স্ট্যাটাস ফেসবুকে আপ করেন স্থানীয় ইউনিয়নের ই-সেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা আনোয়ার হোসেন; যা নজরে আসে যশোরের জেলা প্রশাসক ড. মো. হুমায়ুন কবীরের। তিনি মন্তব্য কলামে ইউএনও মণিরামপুরকে বিষয়টি সরেজমিন খতিয়ে দেখতে বলেন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশ পেয়ে উপজেলা প্রকৌশলী জহির মেহেদী হাসানকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার বেলা ১২টার দিকে বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে যান মণিরামপুরের ইউএনও কামরুল হাসান। তিনি সবকিছু দেখে আপাতত ওই ভবনে পাঠদান বন্ধ রাখতে শিক্ষকদের নির্দেশ দেন।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফিরোজ রানা জানান, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী সংখ্যা বেশি হওয়ায় দুই গ্রুপ করে ক্লাস নেয়া হতো। ভবনটি পরিত্যক্ত হওয়ায় এখন গ্রুপ করে ক্লাস নেয়া সম্ভব না হওয়ায় তৃতীয় শ্রেণির ৯০ জন ও চতুর্থ শ্রেণির ৭০ জনের ক্লাস একসঙ্গে নিতে হচ্ছে। যা খুবই কষ্টকর ও বাচ্চাদের জন্য ক্ষতিকর।
তিনি জানান, অফিস কক্ষটি ওই বিল্ডিংয়ে হওয়ায় সেখানেও ফাটল ধরে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কক্ষ সংকটের কারণে ঝুঁকি নিয়ে সেখানে অফিস করতে হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, ‘ভবনটি অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ। যেহেতু স্কুলে আরও দুটো বিল্ডিং আছে, তাই সেখানে আপাতত ক্লাস নিতে বলেছি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
0 comments: